ইহুদিরা হযরত ওমর রাঃ ৪টি প্রশ্ন করে বিপদে ফেলার চেষ্টা করেছিল
![]() |
ইহুদিরা হযরত ওমর রাঃ ৪টি প্রশ্ন করে বিপদে ফেলার চেষ্টা করেছিল ভিডিও থেকে নেয়া: ছবি |
আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ,
সুপ্রিয় দর্শক আপনাদের সকলকে আমাদের এ পেজে স্বাগতম, আজ আপনাদেরকে জানাবো ইহুদীরা
হযরত ওমর রাঃ যে চারটি প্রশ্ন করে বিপদে ফেলার চেষ্টা
করেছিল, এই ঘটনাটি জানার আগে,
আপনাদেরকে একটি কথাই বলবো, নামাজ বাদ দিও না বন্ধু এপারের
চেয়ে ওপারের জীবন অনেক সুন্দর।
হযরত ওমর রাঃ তৎকালীন সময়ে গোটা আরবের শিক্ষিত লোকদের মধ্যে ছিলেন অন্যতম, সমগ্র আরবে স্বল্প পরিস্বরে যে কয়জন লোক
অক্ষর জ্ঞানের অধিকারী ছিল, তাদের মধ্যে হযরত ওমর রাঃ ছিলেন একজন, ইসলামী খেলাফতে তখন স্বর্ণযুগ চলছে।
ইসলামের এই বিজয় থামাতে একের পর এক কটো কৌশলের সাজাতে ব্যস্ত তখন ইহুদীরা, তেমনি অপকৌশলের অংশ হিসেবে কয়েকজন ইহুদি ধর্মযাজক হযরত ওমর রাঃ তা'আলা আনহুর দরবারে গেলেন, তারা খলিফা ওমর রাঃ প্রস্তাব দিল যে, তারা চারটি প্রশ্ন করবে! এবং তার উত্তর আসমানী
কিতাব থেকেই দিতে হবে, মুসলমানদের যে কেউ উত্তর দিতে পারলে ধর্ম যাজকরা সবাই ইসলাম গ্রহণ করবে।
কিন্তু যদি কেউ প্রশ্নের
উত্তর দিতে না পারে তবে ধর্ম যাজকরা সর্বত্র এ পরাজয়ের কথা ছড়িয়ে দিবে, যার পরিণতিতে ইসলামী খেলাফতের ভাব মর্যাদা চরম সংকটের সম্মুখীন হবে, হযরত ওমর রাঃ তাদের শর্তে রাজি হলেন, তারা চারটি প্রশ্ন করল।
প্রথম প্রশ্ন: দুজন যমজ ভাই
যারা একসঙ্গে জন্মগ্রহণ করে ও পরবর্তীতে একই সঙ্গে মৃত্যুবরণ করে, কিন্তু তাদের বয়সের মধ্যে ১০০ বছরের পার্থক্য, এরা কোন দুই ভাই, এদের মাঝে বয়সেদের
পার্থক্য কেন?
দ্বিতীয় প্রশ্ন: পৃথিবীর এমন একটি স্থান যেখানে সূর্য্যর কিরণ মাত্র একবারে পড়েছিল, এর আগে কখনো সেখানে সূর্য্যর আলো পড়েনি, ভবিষ্যতেও পড়বে না জায়গাটি কোন জায়গা?
তৃতীয় প্রশ্ন
ছিল: একটি কবর, তার ভিতরে একটি লাশ, কিন্তু কথা হল এ কবরেরও প্রাণ আছে, তার ভেতরকার লাশটিরও প্রাণ আছে, ওই কবরটি
লাশকে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, একসময় লাশটি কবর থেকে বের হয়ে আসে, এটি কোন কবর ও কোন
লাশ?
চতুর্থ প্রশ্ন: একটি কারাগারের ভেতর একজন লোক বন্দী, লোকটি সেখানে কোন প্রকার শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে
পারেনা, তারপরও লোকটি দিব্যি
বেঁচে থাকে, এটি কোন কারাগার?
ওমর
রাঃ এই বিচিত্র প্রশ্নগুলো শুনে প্রখ্যাত সাহাবী হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদকে ডেকে পাঠালেন, তিনি ছিলেন আসমানী
কিতাবসমূহের গবেষক ও বিশারদ এবং বিজ্ঞ ফকিহ, এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ, খলিফার কাছ থেকে প্রশ্ন গুলো খুবই মনোযোগ দিয়ে শুনলেন, শুনে
বললেন, আমিরুল মোমেনীন, আপনি কোন চিন্তা করবেন না, তারা এখনই তাদের উত্তর পেয়ে যাবে অতঃপর তিনি
উত্তর দিতে শুরু করলেন।
প্রথম প্রশ্ন: হচ্ছে যমজ দু’ভাই যারা একসঙ্গে জন্মগ্রহণ করে ও পরবর্তীতে এক সঙ্গে মারা যায়, কিন্তু তাদের বয়সের মধ্যে ১০০ বছরের পার্থক্য, এরা কোন দুই ভাই এদের মাঝে বয়সের এই পার্থক্য কেন, প্রথম প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, এই দুইভাই হলেন, ইহুদিদের নবী হযরত উযাইর আঃ, এবং উনার ভাই, তারা দুজন একই সঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন।
একদিন উজাইর
আঃ জনমানবহীন প্রান্তর অতিক্রম করছিলেন, যেখানে নেই কোন মানুষ, নেই কোন প্রাণ, শুন্য
খাঁ খাঁ ময়দান দেখে তিনি বললেন, হে আল্লাহ এরকম স্থানেও
কি কখনো আবাদ হতে পারে? এ কথা বলার কিছুক্ষণ পর, তিনি এক গাছের তলায় ঘুমিয়ে গেলেন,
আল্লাহপাক তার কুদরত দেখানোর জন্য নবীকে বেছে নিলেন, তিনি নবী উযাইর আঃ এর প্রাণ নিয়ে নিলেন।
১০০ বছর নবী উযাইর আঃ প্রাণহীন
ভাবে ঘুমিয়ে রইলেন, তাই উনার বয়স আর ভাড়লো না, তারপর ঘুম থেকে উঠে নবী দেখলেন সে
প্রান্তর জন মানুষের কোলাহলে ভরপুর, সেখানে আবাদ হয়ে গেছে পরবর্তীতে নবী উযাইর আঃ উনার ভাই একই দিনে মারা
যান, এবং এই জায়গাটি ছিল বাইতুল মুকাদ্দাস এলাকা জেরুজালেম।
দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে: পৃথিবীর এমন একটি স্থান যেখানে সূর্য্যর কিরণ
মাত্র একবার পড়েছিল, এর আগে কখনো সেখানে সূর্য্যর আলো পড়েনি, ভবিষ্যতেও পড়বে না জায়গাটি
কোথায়,
দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর হল, যে জমিনের সূর্য্যর জীবদ্দশায় একবার উদিত হয়েছিল আর কখনো উঠবে না, সেটি হল
লোহিত সাগরের তলদেশ, লোহিত সাগরের পানি দুই ভাগ হয়ে রাস্তা হয়েছিল।
হযরত মুসা আঃ সে রাস্তা পাড়ি দিয়ে লোহিত
সাগর পার হয়েছিলেন, তার
সঙ্গীরাও পার হওয়ার পর হযরত মুসা আঃ এর অলৌকিক ঘটনার কারণে লহিত সাগরের পানি
মিলিত হয়ে যায়, সেই রাস্তাটি এবং সেই জমিনে শুধুমাত্র
ওই দিনেই সূর্য দেখা গিয়েছিল, কেয়ামত পর্যন্ত আর
কোনদিনই সেখানে সূর্যের আলো প্রবেশ করবে না।
তৃতীয় প্রশ্ন
ছিল: একটি কবর, তার ভিতরে একটি লাশ, কিন্তু কথা হল এ কবরেরও প্রাণ আছে, তার ভেতরকার লাশটিরও প্রাণ আছে, ওই কবরটি
লাশকে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, একসময় লাশটি কবর থেকে বের হয়ে আসে, এটি কোন কবর ও কোন
লাশ?
তৃতীয় প্রশ্নের উত্তর হল: হযরত
ইউনুস আঃ, তিনি ও তিমি মাছের পেট, তিমি
মাছের পেটের ভিতর জীবিত ছিল হযরত ইউনুস আঃ, ইউনুস আঃ ৪০ দিন জীবিত
ছিল মাছের পেটের ভিতরে, এবং মাছ
তাকে নিয়ে সমুদ্রে ৪০ দিন ভ্রমণ করেছিল, ৪০ দিন পর হযরত ইউনুস আঃ মাছের পেট থেকে বের হয়ে আসেন, এবং আরো কিছু
বছর বেঁচে থাকার পর তিনি ইন্তেকাল করেন।
চতুর্থ প্রশ্ন: ছিল একটি কারাগারের ভেতর একজন লোক
বন্দী, লোকটি
সেখানে কোন প্রকার শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারেনা, তারপরও
লোকটি দিব্যি বেঁচে থাকে, এটি কোন
কারাগার?
চতুর্থ প্রশ্নের
উত্তর হল: মায়ের মাতৃগর্ভের শিশু, মাতৃগর্ভের শিশু আল্লাহ তায়লা তার
শ্বাস-প্রশ্বাসের কোন ব্যবস্থা রাখেননি, শিশু মাতৃগর্ভে
শ্বাস নেয় না তারপরও আল্লাহ তায়লার অশেষ মেহেরবাণীতে
বেঁচে থাকে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ উত্তর শুণে হযরত ওমর রাঃ সেদিন খ্রিস্টান জাযকদের সকল উত্তর
দিলেন, সেদিন খ্রিস্টান জাযকরা বললেন।
মুসলমানদের
মধ্যে এখনো কোনো নবী জীবিত আছেন, কেননা এসব প্রশ্নের
উত্তর কোন নবী ছাড়া কোন মানুষের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়।
বন্ধুরা আমরা আজকে জানতে পারলাম ইহুদিরা কিভাবে হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু কে বিপদের সম্মুখীন করেছিলেন, আজ এ পর্যন্তই, দেখা হবে পরের কোন এপিসোডে সে
পর্যন্ত ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন- আল্লাহ হাফেজ
ইসলামিক মিডিয়া